ডায়াবেটিস কি, কেন হয় ও কি করা উচিত?


ডায়াবেটিস একটি বিপাকজনিত রোগ আমাদের শরীরে ইনস্যুলিন নামের হরমোনের সম্পূর্ণ বা আপেক্ষিক ঘাটতির কারণে বিপাকজনিত গোলযোগ সৃষ্টি হয়ে রক্তে গ্লুকোজের পরিমাণ বৃদ্ধি পায় এবং এক সময় তা প্রস্রাবের সঙ্গে বেরিয়ে আসে এই সামগ্রিক অবস্থাকে ডায়াবেটিস বলে এই রোগে রক্তে গ্লুকোজের পরিমাণ দীর্ঘস্থায়ীভাবে বেড়ে যায় 

সুস্থ লোকের রক্তে প্লাজমায় গ্লুকোজের পরিমাণ অভুক্ত অবস্থায় . মিলি মোলের কম এবং খাবার দুই ঘণ্টা পরে . মিলি মোলের কম থাকে। অভুক্ত অবস্থায় রক্তের প্লাজমায় গ্লুকোজের পরিমাণ . মিলি মোলের বেশি হলে অথবা ৭৫ গ্রাম গ্লুকোজ খাওয়ার দুই ঘণ্টা পরে রক্তের প্লাজমায় গ্লুকোজের পরিমাণ ১১. মিলি মোলের বেশি হলে ডায়াবেটিস হয়েছে বলে গণ্য করা হয়

ইনসুলিন রেসিস্ট্যান্স কী?
ইনসুলিন রেসিস্ট্যান্স একটি শারীরিক অবস্থা যেখানে শরীরে ইনসুলিন তৈরি হয়। কিন্তু যা সঠিকভাবে কাজ করে না অর্থাৎ শরীরে রক্তের গ্লুকোজের মাত্রা সঠিকভাবে কমাতে পারে না। কোনো ব্যক্তির শরীরে ইনসুলিন রেসিস্ট্যান্স হলে পরবর্তীতে তার ডায়াবেটিস দেখা দেয়, সাধারণত টাইপ- ডায়াবেটিস

ইনসুলিন রেসিস্ট্যান্স হলে সাধারণত রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা বেড়ে যায়, তন্ত্রাচ্ছন্ন ভাব থাকে। মস্তিষ্কস্থূলতা দেখা দেয়, ওজন বাড়ে। শরীরে চর্বি জমে, রক্তচাপ বাড়ে, ক্ষুধা তৃষ্ণা স্বাভাবিকের তুলনায় বেড়ে যায়

ডায়াবেটিসের লক্ষণসমূহঃ
. ঘন ঘন প্রস্রাব হওয়া
. খুব বেশি পিপাসা লাগা
. বেশি ক্ষুধা পাওয়া
. যথেষ্ট খাওয়া সত্ত্বেও ওজন কমে যাওয়া
. ক্লান্তি দুর্বলতা বোধ করা
. ক্ষত শুকাতে বিলম্ব হওয়া
. খোস-পাঁচড়া, ফোঁড়া প্রভৃতি চর্মরোগ দেখা দেওয়া
. চোখে কম দেখা

ডায়াবেটিস রোগ নির্ণয় উপায়ঃ

রক্তের গ্লুকোজের মাত্রা পরিমাপ করে ডায়াবেটিস শনাক্ত করতে হয়। সুস্থ ব্যক্তির রক্তের প্লাজমায় গ্লুকোজের পরিমাণ অভুক্ত অবস্থায় . মিলি মোলের কম এবং খাবার ঘণ্টা পরে . মিলি মোলের কম অথবা ৭৫ গ্রাম গ্লুকোজ খাওয়ার ঘণ্টা পরে রক্তের প্লাজমায় গ্লুকোজের পরিমাণ ১১. মিলিমোলের কম থাকে। কোনো ব্যক্তির রক্তের প্লাজমায় অভুক্ত অবস্থায় গ্লুকোজের পরিমাণ . মিলি মোল বা তার বেশি হলে এবং খাবার খাওয়ার অথবা ৭৫ গ্রাম গ্লুকোজ খাওয়ার ঘণ্টা পরে রক্তের প্লাজমায় গ্লুকোজের পরিমাণ ১১. মিলি মোল বা তার বেশি হলে অথবা রক্তের ঐনঅ১প .%-এর বেশি হলে তাকে ডায়াবেটিস রোগী হিসেবে শনাক্ত করা হয়

ডায়াবেটিসের প্রকারভেদ তাদের পার্থক্যসমূহ-
. টাইপ-
. টাইপ-
. গর্ভকালীন ডায়াবেটিস। 
. অন্যান্য নির্দিষ্ট কারণভিত্তিক শ্রেণী

টাইপ-১ঃ
এই ধরনের রোগীদের শরীরে ইনসুলিন একেবারেই তৈরি হয় না। সাধারণত ৩০ বছরের কম বয়সে ধরনের ডায়াবেটিস দেখা যায়। ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণের জন্য এসব রোগীকে ইনসুলিন ইনজেকশন নিতেই হয়। অন্যথায় রক্তের শর্করা অতি দ্রুত বেড়ে গিয়ে অল্প সময়ের মধ্যেই রক্তে অম্লজাতীয় বিষক্রিয়ায় অজ্ঞান হয়ে মৃত্যুমুখে পতিত হয়

টাইপ-২ঃ
এই শ্রেণীর রোগীর বয়স অধিকাংশ ক্ষেত্রেই ত্রিশ বছরের ওপরে হয়ে থাকে। আজকাল ত্রিশ বছরের নিচেও ধরনের রোগীর সংখ্যা দেখা দিচ্ছে দিনে দিনে বেড়ে চলছে। এদের শরীরে ইনসুলিন তৈরি হয়। তবে, প্রয়োজনে ইনসুলিন ইনজেকশন না দিলে টাইপ- রোগীর মতো এদের বিষক্রিয়া হয় না। অর্থাৎ এরা ইনসুলিন নির্ভরশীল নয়। অনেক ক্ষেত্রে খাদ্যাভ্যাসের পরিবর্তন নিয়মিত ব্যায়ামের সাহায্যে এদের চিকিৎসা করা সম্ভব

গর্ভকালীন ডায়াবেটিস-
অনেক সময় গর্ভবতী অবস্থায় প্রসূতিদের ডায়াবেটিস ধরা পড়ে। আবার প্রসবের পর ডায়াবেটিস থাকে না। এই প্রকার জটিলতাকেই গর্ভকালীন ডায়াবেটিস বলা হয়। গর্ভবতী মহিলাদের ডায়াবেটিস হলে গর্ভবতী মা গর্ভবতী শিশু উভয়ের জন্য বিপজ্জনক হতে পারে। বিপদ এড়ানোর জন্য গর্ভকালীন অবস্থায় ইনসুলিনের মাধ্যমে বিশেষভাবে নিয়ন্ত্রণে রাখা আবশ্যক

অন্যান্য নির্দিষ্ট কারণভিত্তিক শ্রেণী-
. জেনেটিক কারণে ইনসুলিন তৈরি কম হওয়া
. জেনেটিক কারণে ইনসুলিনের কার্যকারিতা কমে যাওয়া
. অগ্ন্যাশয়ের বিভিন্ন রোগ
. অন্যান্য হরমোন আধিক্য
. ওষুধ রাসায়নিক দ্রব্যের সংস্পর্শ

ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হওয়ার কারণসমূহ-
যে কেউ যে কোনো বয়সে যেকোনো সময় ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হতে পারেন
 তবে নিম্নোক্ত শ্রেণীর ব্যক্তিদের মধ্যে ডায়াবেটিস হওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে:

. যাদের বংশে বিশেষ করে বাবা-মা বা রক্ত সম্পর্কিত নিকটাত্মীয়ের ডায়াবেটিস আছে
. যাদের ওজন অনেক বেশি যারা ব্যায়াম বা শারীরিক পরিশ্রমের কোনো কাজ করেন না
. যারা বহুদিন ধরে কর্টিসোল জাতীয় ওষুধ ব্যবহার করেন
. যেসব মহিলার গর্ভাবস্থায় ডায়াবেটিস ছিল আবার যেসব মহিলা পাউন্ডের বেশি ওজনের বাচ্চা প্রসব করেছেন
. যাদের রক্তচাপ আছে এবং রক্তে কোলেস্টেরল বেশি থাকে

মাতৃত্বকালীন ডায়াবেটিস কী?
অনেক সময় গর্ভধারণ করার পর ডায়াবেটিস ধরা পড়ে। এবং প্রসবের পর রক্তে গ্লুকোজের পরিমাণ স্বাভাবিক হয়ে যায়। তাকে মাতৃত্বকালীন ডায়াবেটিস বলে। গর্ভবতী অবস্থায় মায়ের শরীরে স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি পরিমাণে ইনসুলিন প্রয়োজন হয়, রক্তের গ্লুকোজের পরিমাণ স্বাভাবিক রাখার জন্য। যদি এই ইনসুলিন তৈরিতে শরীর অক্ষম হয় তাহলে ওই গর্ভবতী মায়ের গর্ভাবস্থায় রক্তে গ্লুকোজের পরিমাণ বেড়ে যায়, অর্থাৎ মাতৃত্বকালীন ডায়াবেটিস হয়। মাতৃত্বকালীন ডায়াবেটিসের জন্য প্লাসেন্টাল হরমোনও দায়ী

ডায়াবেটিস আক্রান্ত হলে কী ধরণের জটিলতা হতে পারে?
পক্ষাঘাত স্নায়ুতন্ত্রের জটিলতা, হৃদরোগ, পায়ে পচনশীল ক্ষত, চক্ষুরোগ, প্রস্রাবে আমিষ বের হওয়া পরবর্তীতে কিডনির কার্যক্ষমতা লোপ পাওয়া। পাতলা পায়খানা, যক্ষ্মা, মাড়ির প্রদাহ, চুলকানি, ফোঁড়া, পাঁচড়া ইত্যাদি। তাছাড়া রোগের কারণে যৌনক্ষমতা কমে যায়। মহিলাদের ক্ষেত্রে বেশি ওজনের শিশু জন্ম, মৃত শিশুর জন্ম, অকালে সন্তান প্রসব, জন্মের পরেই শিশুর মৃত্যু এবং নানা ধরনের জন্মগত ত্রুটি দেখা দিতে পারে

ডায়াবেটিস ব্যবস্থাপনায় করণীয় কি?
ডায়াবেটিস ব্যবস্থাপনায় চারটি নিয়ম মেনে চলতে হয়-

. খাদ্য ব্যবস্থা
. সাধ্যমতো কায়িক পরিশ্রম ব্যায়াম
. ওষুধ
. ডায়াবেটিস সম্পর্কিত শিক্ষা

খাদ্য ব্যবস্থা-
ডায়াবেটিস হলে খাদ্যের একটি নির্দিষ্ট নিয়ম মেনে চলতে হয়। খাদ্যের নিয়ম মেনে চলার প্রধান উদ্দেশ্য ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখা স্বাস্থ্য ভালো রাখা

খাদ্য গ্রহণের নীতি-
. শরীরের ওজন বেশি থাকলে কমানো বা কম থাকলে বাড়িয়ে স্বাভাবিক করা এবং স্বাভাবিক থাকলে সেটা বজায় রাখা
. চিনি, মিষ্টি জাতীয় খাবার বাদ দেওয়া
. শর্করাবহুল খাবার কিছুটা হিসাব করে খাওয়া
. আঁশবহুল খাবার বেশি খাওয়া
. সম্পৃক্ত ফ্যাট কম খাওয়া এবং অসম্পৃক্ত ফ্যাট খাওয়ার অভ্যাস করা
. ক্যালরিবহুল খাবার নির্দেশিত পরিমাণে খাওয়া
. নির্দিষ্ট সময়ে খাবার খাওয়া। . কোনো বেলার খাবার খাওয়া বাদ না দেওয়া
. আজ কম, কাল বেশি এভাবে না খাওয়া

সাধ্যমতো কায়িক পরিশ্রম ব্যায়াম
রোগ নিয়ন্ত্রণের বিষয়ে ব্যায়াম বা শরীরচর্চার ভূমিকা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। ব্যায়াম বা দৈহিক পরিশ্রম মাংসপেশির জড়তা দূর করে এবং রক্ত চলাচলে সাহায্য করে। শরীর সুস্থ থাকে। ফলে ইনসুলিনের কার্যকারিতা বেড়ে যায়। প্রতিদিন অন্তত ৩০ মিনিট এবং সপ্তাহে কমপক্ষে দিন হাঁটলে শরীর যথেষ্ট সুস্থ থাকবে

ওষুধ-
সব ডায়াবেটিস রোগীকেই খাদ্য ব্যবস্থা, ব্যায়াম শৃঙ্খলা মেনে চলতে হয়। বিশেষ করে বয়স্ক রোগীদের ক্ষেত্রে যথাযথভাবে পালন করতে পারলে রোগ নিয়ন্ত্রণে এসে যায়। কিন্তু টাইপ- ডায়াবেটিস রোগীদের ক্ষেত্রে ইনসুলিন ইনজেকশনের প্রয়োজন হয়। টাইপ- ডায়াবেটিস রোগীদের ক্ষেত্রে খাবার বড়ি এবং প্রয়োজনে ইনসুলিন ব্যবহার করতে হয়

শিক্ষা-
ডায়াবেটিস আজীবনের রোগ; সঠিক ব্যবস্থা নিলে এই রোগকে সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব। তাই রোগের সুচিকিৎসার জন্য ডায়াবেটিস সম্পর্কে রোগীর যেমন শিক্ষা প্রয়োজন, তেমনি রোগীর নিকটাত্মীয়দেরও এই রোগ সম্পর্কে জ্ঞান থাকা দরকার। কারণ শিক্ষার কোনো বিকল্প নেই

 ডায়াবেটিস একটি বিপাকজনিত রোগ আমাদের শরীরে ইনস্যুলিন নামের হরমোনের সম্পূর্ণ বা আপেক্ষিক ঘাটতির কারণে বিপাকজনিত গোলযোগ সৃষ্টি হয়ে রক্তে গ্লুকোজের পরিমাণ বৃদ্ধি পায় এবং এক সময় তা প্রস্রাবের সঙ্গে বেরিয়ে আসে এই সামগ্রিক অবস্থাকে ডায়াবেটিস বলে এই রোগে রক্তে গ্লুকোজের পরিমাণ দীর্ঘস্থায়ীভাবে বেড়ে যায় 

সুস্থ লোকের রক্তে প্লাজমায় গ্লুকোজের পরিমাণ অভুক্ত অবস্থায় . মিলি মোলের কম এবং খাবার দুই ঘণ্টা পরে . মিলি মোলের কম থাকে। অভুক্ত অবস্থায় রক্তের প্লাজমায় গ্লুকোজের পরিমাণ . মিলি মোলের বেশি হলে অথবা ৭৫ গ্রাম গ্লুকোজ খাওয়ার দুই ঘণ্টা পরে রক্তের প্লাজমায় গ্লুকোজের পরিমাণ ১১. মিলি মোলের বেশি হলে ডায়াবেটিস হয়েছে বলে গণ্য করা হয়

ইনসুলিন রেসিস্ট্যান্স কী?
ইনসুলিন রেসিস্ট্যান্স একটি শারীরিক অবস্থা যেখানে শরীরে ইনসুলিন তৈরি হয়। কিন্তু যা সঠিকভাবে কাজ করে না অর্থাৎ শরীরে রক্তের গ্লুকোজের মাত্রা সঠিকভাবে কমাতে পারে না। কোনো ব্যক্তির শরীরে ইনসুলিন রেসিস্ট্যান্স হলে পরবর্তীতে তার ডায়াবেটিস দেখা দেয়, সাধারণত টাইপ- ডায়াবেটিস

ইনসুলিন রেসিস্ট্যান্স হলে সাধারণত রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা বেড়ে যায়, তন্ত্রাচ্ছন্ন ভাব থাকে। মস্তিষ্কস্থূলতা দেখা দেয়, ওজন বাড়ে। শরীরে চর্বি জমে, রক্তচাপ বাড়ে, ক্ষুধা তৃষ্ণা স্বাভাবিকের তুলনায় বেড়ে যায়

ডায়াবেটিসের লক্ষণসমূহঃ

. ঘন ঘন প্রস্রাব হওয়া
. খুব বেশি পিপাসা লাগা
. বেশি ক্ষুধা পাওয়া
. যথেষ্ট খাওয়া সত্ত্বেও ওজন কমে যাওয়া
. ক্লান্তি দুর্বলতা বোধ করা
. ক্ষত শুকাতে বিলম্ব হওয়া
. খোস-পাঁচড়া, ফোঁড়া প্রভৃতি চর্মরোগ দেখা দেওয়া
. চোখে কম দেখা

ডায়াবেটিস রোগ নির্ণয় উপায়ঃ

রক্তের গ্লুকোজের মাত্রা পরিমাপ করে ডায়াবেটিস শনাক্ত করতে হয়। সুস্থ ব্যক্তির রক্তের প্লাজমায় গ্লুকোজের পরিমাণ অভুক্ত অবস্থায় . মিলি মোলের কম এবং খাবার ঘণ্টা পরে . মিলি মোলের কম অথবা ৭৫ গ্রাম গ্লুকোজ খাওয়ার ঘণ্টা পরে রক্তের প্লাজমায় গ্লুকোজের পরিমাণ ১১. মিলিমোলের কম থাকে। কোনো ব্যক্তির রক্তের প্লাজমায় অভুক্ত অবস্থায় গ্লুকোজের পরিমাণ . মিলি মোল বা তার বেশি হলে এবং খাবার খাওয়ার অথবা ৭৫ গ্রাম গ্লুকোজ খাওয়ার ঘণ্টা পরে রক্তের প্লাজমায় গ্লুকোজের পরিমাণ ১১. মিলি মোল বা তার বেশি হলে অথবা রক্তের ঐনঅ১প .%-এর বেশি হলে তাকে ডায়াবেটিস রোগী হিসেবে শনাক্ত করা হয়

ডায়াবেটিসের প্রকারভেদ তাদের পার্থক্যসমূহ-

. টাইপ-
. টাইপ-
. গর্ভকালীন ডায়াবেটিস। 
. অন্যান্য নির্দিষ্ট কারণভিত্তিক শ্রেণী

টাইপ-১ঃ
এই ধরনের রোগীদের শরীরে ইনসুলিন একেবারেই তৈরি হয় না। সাধারণত ৩০ বছরের কম বয়সে ধরনের ডায়াবেটিস দেখা যায়। ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণের জন্য এসব রোগীকে ইনসুলিন ইনজেকশন নিতেই হয়। অন্যথায় রক্তের শর্করা অতি দ্রুত বেড়ে গিয়ে অল্প সময়ের মধ্যেই রক্তে অম্লজাতীয় বিষক্রিয়ায় অজ্ঞান হয়ে মৃত্যুমুখে পতিত হয়

টাইপ-২ঃ
এই শ্রেণীর রোগীর বয়স অধিকাংশ ক্ষেত্রেই ত্রিশ বছরের ওপরে হয়ে থাকে। আজকাল ত্রিশ বছরের নিচেও ধরনের রোগীর সংখ্যা দেখা দিচ্ছে দিনে দিনে বেড়ে চলছে। এদের শরীরে ইনসুলিন তৈরি হয়। তবে, প্রয়োজনে ইনসুলিন ইনজেকশন না দিলে টাইপ- রোগীর মতো এদের বিষক্রিয়া হয় না। অর্থাৎ এরা ইনসুলিন নির্ভরশীল নয়। অনেক ক্ষেত্রে খাদ্যাভ্যাসের পরিবর্তন নিয়মিত ব্যায়ামের সাহায্যে এদের চিকিৎসা করা সম্ভব

গর্ভকালীন ডায়াবেটিস-
অনেক সময় গর্ভবতী অবস্থায় প্রসূতিদের ডায়াবেটিস ধরা পড়ে। আবার প্রসবের পর ডায়াবেটিস থাকে না। এই প্রকার জটিলতাকেই গর্ভকালীন ডায়াবেটিস বলা হয়। গর্ভবতী মহিলাদের ডায়াবেটিস হলে গর্ভবতী মা গর্ভবতী শিশু উভয়ের জন্য বিপজ্জনক হতে পারে। বিপদ এড়ানোর জন্য গর্ভকালীন অবস্থায় ইনসুলিনের মাধ্যমে বিশেষভাবে নিয়ন্ত্রণে রাখা আবশ্যক

অন্যান্য নির্দিষ্ট কারণভিত্তিক শ্রেণী-
. জেনেটিক কারণে ইনসুলিন তৈরি কম হওয়া
. জেনেটিক কারণে ইনসুলিনের কার্যকারিতা কমে যাওয়া
. অগ্ন্যাশয়ের বিভিন্ন রোগ
. অন্যান্য হরমোন আধিক্য
. ওষুধ রাসায়নিক দ্রব্যের সংস্পর্শ

ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হওয়ার কারণসমূহ-
যে কেউ যে কোনো বয়সে যেকোনো সময় ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হতে পারেন
 তবে নিম্নোক্ত শ্রেণীর ব্যক্তিদের মধ্যে ডায়াবেটিস হওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে:

. যাদের বংশে বিশেষ করে বাবা-মা বা রক্ত সম্পর্কিত নিকটাত্মীয়ের ডায়াবেটিস আছে
. যাদের ওজন অনেক বেশি যারা ব্যায়াম বা শারীরিক পরিশ্রমের কোনো কাজ করেন না
. যারা বহুদিন ধরে কর্টিসোল জাতীয় ওষুধ ব্যবহার করেন
. যেসব মহিলার গর্ভাবস্থায় ডায়াবেটিস ছিল আবার যেসব মহিলা পাউন্ডের বেশি ওজনের বাচ্চা প্রসব করেছেন
. যাদের রক্তচাপ আছে এবং রক্তে কোলেস্টেরল বেশি থাকে

মাতৃত্বকালীন ডায়াবেটিস কী?
অনেক সময় গর্ভধারণ করার পর ডায়াবেটিস ধরা পড়ে। এবং প্রসবের পর রক্তে গ্লুকোজের পরিমাণ স্বাভাবিক হয়ে যায়। তাকে মাতৃত্বকালীন ডায়াবেটিস বলে। গর্ভবতী অবস্থায় মায়ের শরীরে স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি পরিমাণে ইনসুলিন প্রয়োজন হয়, রক্তের গ্লুকোজের পরিমাণ স্বাভাবিক রাখার জন্য। যদি এই ইনসুলিন তৈরিতে শরীর অক্ষম হয় তাহলে ওই গর্ভবতী মায়ের গর্ভাবস্থায় রক্তে গ্লুকোজের পরিমাণ বেড়ে যায়, অর্থাৎ মাতৃত্বকালীন ডায়াবেটিস হয়। মাতৃত্বকালীন ডায়াবেটিসের জন্য প্লাসেন্টাল হরমোনও দায়ী

ডায়াবেটিস আক্রান্ত হলে কী ধরণের জটিলতা হতে পারে?
পক্ষাঘাত স্নায়ুতন্ত্রের জটিলতা, হৃদরোগ, পায়ে পচনশীল ক্ষত, চক্ষুরোগ, প্রস্রাবে আমিষ বের হওয়া পরবর্তীতে কিডনির কার্যক্ষমতা লোপ পাওয়া। পাতলা পায়খানা, যক্ষ্মা, মাড়ির প্রদাহ, চুলকানি, ফোঁড়া, পাঁচড়া ইত্যাদি। তাছাড়া রোগের কারণে যৌনক্ষমতা কমে যায়। মহিলাদের ক্ষেত্রে বেশি ওজনের শিশু জন্ম, মৃত শিশুর জন্ম, অকালে সন্তান প্রসব, জন্মের পরেই শিশুর মৃত্যু এবং নানা ধরনের জন্মগত ত্রুটি দেখা দিতে পারে

ডায়াবেটিস ব্যবস্থাপনায় করণীয় কি?
ডায়াবেটিস ব্যবস্থাপনায় চারটি নিয়ম মেনে চলতে হয়-

. খাদ্য ব্যবস্থা
. সাধ্যমতো কায়িক পরিশ্রম ব্যায়াম
. ওষুধ
. ডায়াবেটিস সম্পর্কিত শিক্ষা

খাদ্য ব্যবস্থা-
ডায়াবেটিস হলে খাদ্যের একটি নির্দিষ্ট নিয়ম মেনে চলতে হয়। খাদ্যের নিয়ম মেনে চলার প্রধান উদ্দেশ্য ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখা স্বাস্থ্য ভালো রাখা

খাদ্য গ্রহণের নীতি-
. শরীরের ওজন বেশি থাকলে কমানো বা কম থাকলে বাড়িয়ে স্বাভাবিক করা এবং স্বাভাবিক থাকলে সেটা বজায় রাখা
. চিনি, মিষ্টি জাতীয় খাবার বাদ দেওয়া
. শর্করাবহুল খাবার কিছুটা হিসাব করে খাওয়া
. আঁশবহুল খাবার বেশি খাওয়া
. সম্পৃক্ত ফ্যাট কম খাওয়া এবং অসম্পৃক্ত ফ্যাট খাওয়ার অভ্যাস করা
. ক্যালরিবহুল খাবার নির্দেশিত পরিমাণে খাওয়া
. নির্দিষ্ট সময়ে খাবার খাওয়া। . কোনো বেলার খাবার খাওয়া বাদ না দেওয়া
. আজ কম, কাল বেশি এভাবে না খাওয়া

সাধ্যমতো কায়িক পরিশ্রম ব্যায়াম
রোগ নিয়ন্ত্রণের বিষয়ে ব্যায়াম বা শরীরচর্চার ভূমিকা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। ব্যায়াম বা দৈহিক পরিশ্রম মাংসপেশির জড়তা দূর করে এবং রক্ত চলাচলে সাহায্য করে। শরীর সুস্থ থাকে। ফলে ইনসুলিনের কার্যকারিতা বেড়ে যায়। প্রতিদিন অন্তত ৩০ মিনিট এবং সপ্তাহে কমপক্ষে দিন হাঁটলে শরীর যথেষ্ট সুস্থ থাকবে

ওষুধ-
সব ডায়াবেটিস রোগীকেই খাদ্য ব্যবস্থা, ব্যায়াম শৃঙ্খলা মেনে চলতে হয়। বিশেষ করে বয়স্ক রোগীদের ক্ষেত্রে যথাযথভাবে পালন করতে পারলে রোগ নিয়ন্ত্রণে এসে যায়। কিন্তু টাইপ- ডায়াবেটিস রোগীদের ক্ষেত্রে ইনসুলিন ইনজেকশনের প্রয়োজন হয়। টাইপ- ডায়াবেটিস রোগীদের ক্ষেত্রে খাবার বড়ি এবং প্রয়োজনে ইনসুলিন ব্যবহার করতে হয়

শিক্ষা-
ডায়াবেটিস আজীবনের রোগ; সঠিক ব্যবস্থা নিলে এই রোগকে সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব। তাই রোগের সুচিকিৎসার জন্য ডায়াবেটিস সম্পর্কে রোগীর যেমন শিক্ষা প্রয়োজন, তেমনি রোগীর নিকটাত্মীয়দেরও এই রোগ সম্পর্কে জ্ঞান থাকা দরকার। কারণ শিক্ষার কোনো বিকল্প নেই
 ডায়াবেটিস একটি বিপাকজনিত রোগ আমাদের শরীরে ইনস্যুলিন নামের হরমোনের সম্পূর্ণ বা আপেক্ষিক ঘাটতির কারণে বিপাকজনিত গোলযোগ সৃষ্টি হয়ে রক্তে গ্লুকোজের পরিমাণ বৃদ্ধি পায় এবং এক সময় তা প্রস্রাবের সঙ্গে বেরিয়ে আসে এই সামগ্রিক অবস্থাকে ডায়াবেটিস বলে এই রোগে রক্তে গ্লুকোজের পরিমাণ দীর্ঘস্থায়ীভাবে বেড়ে যায় 

সুস্থ লোকের রক্তে প্লাজমায় গ্লুকোজের পরিমাণ অভুক্ত অবস্থায় . মিলি মোলের কম এবং খাবার দুই ঘণ্টা পরে . মিলি মোলের কম থাকে। অভুক্ত অবস্থায় রক্তের প্লাজমায় গ্লুকোজের পরিমাণ . মিলি মোলের বেশি হলে অথবা ৭৫ গ্রাম গ্লুকোজ খাওয়ার দুই ঘণ্টা পরে রক্তের প্লাজমায় গ্লুকোজের পরিমাণ ১১. মিলি মোলের বেশি হলে ডায়াবেটিস হয়েছে বলে গণ্য করা হয়

ইনসুলিন রেসিস্ট্যান্স কী?
ইনসুলিন রেসিস্ট্যান্স একটি শারীরিক অবস্থা যেখানে শরীরে ইনসুলিন তৈরি হয়। কিন্তু যা সঠিকভাবে কাজ করে না অর্থাৎ শরীরে রক্তের গ্লুকোজের মাত্রা সঠিকভাবে কমাতে পারে না। কোনো ব্যক্তির শরীরে ইনসুলিন রেসিস্ট্যান্স হলে পরবর্তীতে তার ডায়াবেটিস দেখা দেয়, সাধারণত টাইপ- ডায়াবেটিস

ইনসুলিন রেসিস্ট্যান্স হলে সাধারণত রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা বেড়ে যায়, তন্ত্রাচ্ছন্ন ভাব থাকে। মস্তিষ্কস্থূলতা দেখা দেয়, ওজন বাড়ে। শরীরে চর্বি জমে, রক্তচাপ বাড়ে, ক্ষুধা তৃষ্ণা স্বাভাবিকের তুলনায় বেড়ে যায়

ডায়াবেটিসের লক্ষণসমূহঃ

. ঘন ঘন প্রস্রাব হওয়া
. খুব বেশি পিপাসা লাগা
. বেশি ক্ষুধা পাওয়া
. যথেষ্ট খাওয়া সত্ত্বেও ওজন কমে যাওয়া
. ক্লান্তি দুর্বলতা বোধ করা
. ক্ষত শুকাতে বিলম্ব হওয়া
. খোস-পাঁচড়া, ফোঁড়া প্রভৃতি চর্মরোগ দেখা দেওয়া
. চোখে কম দেখা

ডায়াবেটিস রোগ নির্ণয় উপায়ঃ

রক্তের গ্লুকোজের মাত্রা পরিমাপ করে ডায়াবেটিস শনাক্ত করতে হয়। সুস্থ ব্যক্তির রক্তের প্লাজমায় গ্লুকোজের পরিমাণ অভুক্ত অবস্থায় . মিলি মোলের কম এবং খাবার ঘণ্টা পরে . মিলি মোলের কম অথবা ৭৫ গ্রাম গ্লুকোজ খাওয়ার ঘণ্টা পরে রক্তের প্লাজমায় গ্লুকোজের পরিমাণ ১১. মিলিমোলের কম থাকে। কোনো ব্যক্তির রক্তের প্লাজমায় অভুক্ত অবস্থায় গ্লুকোজের পরিমাণ . মিলি মোল বা তার বেশি হলে এবং খাবার খাওয়ার অথবা ৭৫ গ্রাম গ্লুকোজ খাওয়ার ঘণ্টা পরে রক্তের প্লাজমায় গ্লুকোজের পরিমাণ ১১. মিলি মোল বা তার বেশি হলে অথবা রক্তের ঐনঅ১প .%-এর বেশি হলে তাকে ডায়াবেটিস রোগী হিসেবে শনাক্ত করা হয়

ডায়াবেটিসের প্রকারভেদ তাদের পার্থক্যসমূহ-

. টাইপ-
. টাইপ-
. গর্ভকালীন ডায়াবেটিস। 
. অন্যান্য নির্দিষ্ট কারণভিত্তিক শ্রেণী

টাইপ-১ঃ
এই ধরনের রোগীদের শরীরে ইনসুলিন একেবারেই তৈরি হয় না। সাধারণত ৩০ বছরের কম বয়সে ধরনের ডায়াবেটিস দেখা যায়। ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণের জন্য এসব রোগীকে ইনসুলিন ইনজেকশন নিতেই হয়। অন্যথায় রক্তের শর্করা অতি দ্রুত বেড়ে গিয়ে অল্প সময়ের মধ্যেই রক্তে অম্লজাতীয় বিষক্রিয়ায় অজ্ঞান হয়ে মৃত্যুমুখে পতিত হয়

টাইপ-২ঃ
এই শ্রেণীর রোগীর বয়স অধিকাংশ ক্ষেত্রেই ত্রিশ বছরের ওপরে হয়ে থাকে। আজকাল ত্রিশ বছরের নিচেও ধরনের রোগীর সংখ্যা দেখা দিচ্ছে দিনে দিনে বেড়ে চলছে। এদের শরীরে ইনসুলিন তৈরি হয়। তবে, প্রয়োজনে ইনসুলিন ইনজেকশন না দিলে টাইপ- রোগীর মতো এদের বিষক্রিয়া হয় না। অর্থাৎ এরা ইনসুলিন নির্ভরশীল নয়। অনেক ক্ষেত্রে খাদ্যাভ্যাসের পরিবর্তন নিয়মিত ব্যায়ামের সাহায্যে এদের চিকিৎসা করা সম্ভব

গর্ভকালীন ডায়াবেটিস-
অনেক সময় গর্ভবতী অবস্থায় প্রসূতিদের ডায়াবেটিস ধরা পড়ে। আবার প্রসবের পর ডায়াবেটিস থাকে না। এই প্রকার জটিলতাকেই গর্ভকালীন ডায়াবেটিস বলা হয়। গর্ভবতী মহিলাদের ডায়াবেটিস হলে গর্ভবতী মা গর্ভবতী শিশু উভয়ের জন্য বিপজ্জনক হতে পারে। বিপদ এড়ানোর জন্য গর্ভকালীন অবস্থায় ইনসুলিনের মাধ্যমে বিশেষভাবে নিয়ন্ত্রণে রাখা আবশ্যক

অন্যান্য নির্দিষ্ট কারণভিত্তিক শ্রেণী-
. জেনেটিক কারণে ইনসুলিন তৈরি কম হওয়া
. জেনেটিক কারণে ইনসুলিনের কার্যকারিতা কমে যাওয়া
. অগ্ন্যাশয়ের বিভিন্ন রোগ
. অন্যান্য হরমোন আধিক্য
. ওষুধ রাসায়নিক দ্রব্যের সংস্পর্শ

ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হওয়ার কারণসমূহ-
যে কেউ যে কোনো বয়সে যেকোনো সময় ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হতে পারেন
 তবে নিম্নোক্ত শ্রেণীর ব্যক্তিদের মধ্যে ডায়াবেটিস হওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে:

. যাদের বংশে বিশেষ করে বাবা-মা বা রক্ত সম্পর্কিত নিকটাত্মীয়ের ডায়াবেটিস আছে
. যাদের ওজন অনেক বেশি যারা ব্যায়াম বা শারীরিক পরিশ্রমের কোনো কাজ করেন না
. যারা বহুদিন ধরে কর্টিসোল জাতীয় ওষুধ ব্যবহার করেন
. যেসব মহিলার গর্ভাবস্থায় ডায়াবেটিস ছিল আবার যেসব মহিলা পাউন্ডের বেশি ওজনের বাচ্চা প্রসব করেছেন
. যাদের রক্তচাপ আছে এবং রক্তে কোলেস্টেরল বেশি থাকে

মাতৃত্বকালীন ডায়াবেটিস কী?
অনেক সময় গর্ভধারণ করার পর ডায়াবেটিস ধরা পড়ে। এবং প্রসবের পর রক্তে গ্লুকোজের পরিমাণ স্বাভাবিক হয়ে যায়। তাকে মাতৃত্বকালীন ডায়াবেটিস বলে। গর্ভবতী অবস্থায় মায়ের শরীরে স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি পরিমাণে ইনসুলিন প্রয়োজন হয়, রক্তের গ্লুকোজের পরিমাণ স্বাভাবিক রাখার জন্য। যদি এই ইনসুলিন তৈরিতে শরীর অক্ষম হয় তাহলে ওই গর্ভবতী মায়ের গর্ভাবস্থায় রক্তে গ্লুকোজের পরিমাণ বেড়ে যায়, অর্থাৎ মাতৃত্বকালীন ডায়াবেটিস হয়। মাতৃত্বকালীন ডায়াবেটিসের জন্য প্লাসেন্টাল হরমোনও দায়ী

ডায়াবেটিস আক্রান্ত হলে কী ধরণের জটিলতা হতে পারে?
পক্ষাঘাত স্নায়ুতন্ত্রের জটিলতা, হৃদরোগ, পায়ে পচনশীল ক্ষত, চক্ষুরোগ, প্রস্রাবে আমিষ বের হওয়া পরবর্তীতে কিডনির কার্যক্ষমতা লোপ পাওয়া। পাতলা পায়খানা, যক্ষ্মা, মাড়ির প্রদাহ, চুলকানি, ফোঁড়া, পাঁচড়া ইত্যাদি। তাছাড়া রোগের কারণে যৌনক্ষমতা কমে যায়। মহিলাদের ক্ষেত্রে বেশি ওজনের শিশু জন্ম, মৃত শিশুর জন্ম, অকালে সন্তান প্রসব, জন্মের পরেই শিশুর মৃত্যু এবং নানা ধরনের জন্মগত ত্রুটি দেখা দিতে পারে

ডায়াবেটিস ব্যবস্থাপনায় করণীয় কি?
ডায়াবেটিস ব্যবস্থাপনায় চারটি নিয়ম মেনে চলতে হয়-

. খাদ্য ব্যবস্থা
. সাধ্যমতো কায়িক পরিশ্রম ব্যায়াম
. ওষুধ
. ডায়াবেটিস সম্পর্কিত শিক্ষা

খাদ্য ব্যবস্থা-
ডায়াবেটিস হলে খাদ্যের একটি নির্দিষ্ট নিয়ম মেনে চলতে হয়। খাদ্যের নিয়ম মেনে চলার প্রধান উদ্দেশ্য ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখা স্বাস্থ্য ভালো রাখা

খাদ্য গ্রহণের নীতি-
. শরীরের ওজন বেশি থাকলে কমানো বা কম থাকলে বাড়িয়ে স্বাভাবিক করা এবং স্বাভাবিক থাকলে সেটা বজায় রাখা
. চিনি, মিষ্টি জাতীয় খাবার বাদ দেওয়া
. শর্করাবহুল খাবার কিছুটা হিসাব করে খাওয়া
. আঁশবহুল খাবার বেশি খাওয়া
. সম্পৃক্ত ফ্যাট কম খাওয়া এবং অসম্পৃক্ত ফ্যাট খাওয়ার অভ্যাস করা
. ক্যালরিবহুল খাবার নির্দেশিত পরিমাণে খাওয়া
. নির্দিষ্ট সময়ে খাবার খাওয়া। . কোনো বেলার খাবার খাওয়া বাদ না দেওয়া
. আজ কম, কাল বেশি এভাবে না খাওয়া

সাধ্যমতো কায়িক পরিশ্রম ব্যায়াম
রোগ নিয়ন্ত্রণের বিষয়ে ব্যায়াম বা শরীরচর্চার ভূমিকা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। ব্যায়াম বা দৈহিক পরিশ্রম মাংসপেশির জড়তা দূর করে এবং রক্ত চলাচলে সাহায্য করে। শরীর সুস্থ থাকে। ফলে ইনসুলিনের কার্যকারিতা বেড়ে যায়। প্রতিদিন অন্তত ৩০ মিনিট এবং সপ্তাহে কমপক্ষে দিন হাঁটলে শরীর যথেষ্ট সুস্থ থাকবে

ওষুধ-
সব ডায়াবেটিস রোগীকেই খাদ্য ব্যবস্থা, ব্যায়াম শৃঙ্খলা মেনে চলতে হয়। বিশেষ করে বয়স্ক রোগীদের ক্ষেত্রে যথাযথভাবে পালন করতে পারলে রোগ নিয়ন্ত্রণে এসে যায়। কিন্তু টাইপ- ডায়াবেটিস রোগীদের ক্ষেত্রে ইনসুলিন ইনজেকশনের প্রয়োজন হয়। টাইপ- ডায়াবেটিস রোগীদের ক্ষেত্রে খাবার বড়ি এবং প্রয়োজনে ইনসুলিন ব্যবহার করতে হয়

শিক্ষা-
ডায়াবেটিস আজীবনের রোগ; সঠিক ব্যবস্থা নিলে এই রোগকে সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব। তাই রোগের সুচিকিৎসার জন্য ডায়াবেটিস সম্পর্কে রোগীর যেমন শিক্ষা প্রয়োজন, তেমনি রোগীর নিকটাত্মীয়দেরও এই রোগ সম্পর্কে জ্ঞান থাকা দরকার। কারণ শিক্ষার কোনো বিকল্প নেই

1 comment:

Powered by Blogger.